পাখী, পাহাড় আর রেডপাণ্ডার দেশপাখী, পাহাড় আর রেডপাণ্ডার দেশ…

আজকে যাব উত্তরবঙ্গের একটি স্বল্প পরিচিত গ্রামে। একটি অফবিট জায়গা, কিন্তু দার্জিলিং থেকে গাড়ীতে যেতে মাত্র আড়াই ঘণ্টা লাগে। আর এন.জে.পি রেলষ্টেশন থেকে এই ছোট্ট গ্রামটিতে পৌঁছতে লাগে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা।


সমুদ্রতল থেকে প্রায় ৭২৫০ ফুট উচুতে অবস্থিত, আজকের গন্তব্য – পালমাজুয়া। 

পালমাজুয়া ট্রেকারদের জন্যে অন্যতম রাত্রিবাসের ঠিকানা। কিন্তু ঘন সবুজ বনভূমির বুকে উন্মুক্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ পাহাড়প্রেমীদেরকে আকর্ষিত করবেই।


এন.জে.পি থেকে প্রথমে পৌঁছতে হবে মানেভঞ্জন। মানেভঞ্জন থেকে গাড়ীতে যেতে আরো ১ ঘণ্টা (প্রায় ২৫ কি.মি.) লাগবে। যাত্রাপথে পেড়িয়ে যাবেন আরেকটি ছোট গ্রাম বাতাসী। পাইনে ঢাকা ঘন জঙ্গল আর কুয়াশার মধ্যে দিয়ে আলো-আঁধারি রাস্তা দিয়ে,পাহাড়ি বাঁক পেরিয়ে গাড়ি পৌঁছবে ধোত্রে। ধোত্রে থেকে গাড়ী উৎরাইতে প্রায় ৫ কি.মি. গেলেই পৌঁছে যাবেন গন্তব্যে।


যেদিকে তাকানো যায়, সেদিকেই পাহাড়, শুধুই পাহাড়। কলকল শব্দে একটা পাহাড়ি ঝর্না জানান দেয় তার উপস্থিতি। নিজের ছন্দে পাহাড়ি নদীটা বইছে তিরতির করে। আর রয়েছে একটা সরু সাঁকো। সবমিলিয়ে যেন খাতায় আঁকা ছবি।


পালমাজুয়া, সিঙ্গালিলা ন্যাশনাল পার্কের একধারে অবস্থিত, এই জঙ্গলে আছে দূর্লভ রেডপাণ্ডা, প্যাঙ্গোলিন, চিতা, হরিণ এবং প্রায় ১৭০ প্রজাতির পাখী। পাখীদের কলতান সারাদিন মন ভরিয়ে রাখে।


পাহাড়ের গায়ে লেগে থাকা এই ছোট্ট গ্রামে, মাত্র কয়েকটা পরিবারের বাস, বেশিটা জুড়েই রয়েছে হোমস্টে আর লজ। যেহেতু পর্যটন ব্যবসার ওপর এখানকার মানুষজন অনেকটাই নির্ভরশীল, তাই ওনারা পর্যটকদের খুশি করার সাধ্যমত চেষ্টা করেন।


এখান থেকে কাছে-পিঠে দেখে নিতে পারেন রিম্বিক, শ্রীখোলা, মেঘমা, এমনকি সান্দাকফু। ধোত্রেতে দেখতে যেতে পারেন সূর্যোদয়, আর সূর্যের প্রথম আলোয় যদি দেখতে পান বরফে ঢাকা, সোনালি কাঞ্চনজঙ্ঘা, তাহলে ঐ দৃশ্য আপনার কাছে আজীবন অমলিন হয়ে থাকবে।